চার মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের রাজস্ব খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে শুল্ক ও কর আদায়ে বড় ঘাটতি দেখা গেছে, যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকায়।

Nov 10, 2024 - 04:13
Nov 10, 2024 - 04:14
 0  8
চার মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবন l

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের রাজস্ব খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে শুল্ক ও কর আদায়ে বড় ঘাটতি দেখা গেছে, যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাময়িক তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে শুল্ক ও কর সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিটি মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে এনবিআর।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং আগস্টের শুরুতে সরকার পরিবর্তন ও কারফিউর কারণে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে, যা শুল্ক ও কর আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরপর নতুন সরকার গঠিত হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায়ে বাধা আসে।

আমরা জানি কেন ঘাটতি হয়। অতীতের সরকার প্রতিবছর বাজেট বড় করেছে। বাজেটের অর্থ জোগানের হিসাব মেলাতে এনবিআরের ওপর অযৌক্তিকভাবে বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
          —মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, সাবেক চেয়ারম্যান, এনবিআর।

এনবিআরের হিসাবে, জুলাই-অক্টোবর সময়ে তাদের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১২ কোটি টাকা, কিন্তু এ সময়ে সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা, ফলে ৩০ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। তবে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার পর ঘাটতির পরিমাণ কমবে বলে কর্মকর্তারা আশাবাদী।

গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার লক্ষ্য অর্জন কঠিন হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বছরের শেষের দিকে কর আদায়ে গতি বাড়বে বলে মনে করছেন।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও রাজস্ব খাত সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব এবং এনবিআরের ওপর বড় বাজেটের চাপ এই ঘাটতির জন্য দায়ী। তিনি মনে করেন, রাজস্ব আদায়ে বৃদ্ধিই আসল মাপকাঠি হওয়া উচিত।

তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-অক্টোবর সময়ে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর—সব খাতেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল। আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি সবচেয়ে বেশি—১২ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। আমদানি খাতে ঘাটতি ছিল প্রায় ৬ হাজার ৯১২ কোটি টাকা এবং ভ্যাট খাতে ১১ হাজার ১০২ কোটি টাকা।

একজন ঊর্ধ্বতন এনবিআর কর্মকর্তা জানান, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এনবিআর কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এবং বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের ফলে শিগগিরই শুল্ক ও কর আদায়ে উন্নতি হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow