বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি পাঠালেন এস আলম
বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে গভর্নরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজন হলে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
এস আলম গ্রুপের চিঠি: গভর্নরকে হুঁশিয়ারি, আন্তর্জাতিক সালিশি মামলা শুরুর ইঙ্গিত
বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে গভর্নরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজন হলে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) জানিয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা (১০ বিলিয়ন ডলার) পাচারের অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে এস আলম গ্রুপসহ সরকারের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা ব্যাংক খাত থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন। বিশেষ করে, এস আলম গ্রুপ আমদানি ভাউচারের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ এবং ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে ঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
এস আলম গ্রুপের পাল্টা চিঠি
এস আলম পরিবারের পক্ষে আইনজীবী প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উর্কুহার্ট অ্যান্ড সালিভান গভর্নর আহসান মনসুরকে চিঠি দিয়ে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন, উসকানিমূলক, এবং মানহানিকর বলে অভিহিত করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মন্তব্য রাষ্ট্রের বক্তব্য হিসেবে গণ্য হবে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে অধিকার এবং সুরক্ষা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সালিশি মামলার হুমকি
চিঠিতে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ তাদের বিনিয়োগকারীদের অধিকার রক্ষা করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সালিশি মামলা ছাড়াও অন্যান্য আইনি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সাইফুল আলমের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন
এফটি জানায়, সাইফুল আলম কবে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেয়েছেন বা তিনি এখনো বাংলাদেশের নাগরিক কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সিঙ্গাপুর সরকারও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রমতে, দেশের আইন মেনে বিদেশে বিনিয়োগের কোনো অনুমোদন নেননি সাইফুল আলম। বৈধ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তালিকাতেও তার নাম নেই।
পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপের এই চিঠি এবং আন্তর্জাতিক সালিশি মামলার হুমকি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত অনুযায়ী, সেখানে ২৫ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার (প্রায় ২৩ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করতে হয়। তবে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নিতে হলে নিজের দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হয়। সাইফুল আলমের এই বিনিয়োগ এবং নাগরিকত্বের বিষয়ে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা।
What's Your Reaction?