দাম বাড়ানোর পরও বাজার থেকে নেই সয়াবিন

চট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের সংকট কাটেনি, দাম বৃদ্ধির পরেও বাজারে পরিস্থিতি এখনো অস্থির। সয়াবিন তেলের চাহিদার অর্ধেকও পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে এই গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম। দাম বৃদ্ধির পরেও সংকটের পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়েছে। 

Dec 28, 2024 - 04:49
 0  1
দাম বাড়ানোর পরও বাজার থেকে নেই সয়াবিন

**চট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের সংকট অব্যাহত, দাম বাড়লেও পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি**  

চট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের সংকট কাটেনি, দাম বৃদ্ধির পরেও বাজারে পরিস্থিতি এখনো অস্থির। সয়াবিন তেলের চাহিদার অর্ধেকও পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে এই গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম। দাম বৃদ্ধির পরেও সংকটের পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়েছে। 

দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এখনও ভোজ্যতেলের সংকট বিদ্যমান। পাইকারি বাজার থেকে সয়াবিন হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে, বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ অনেকটাই বন্ধ। 

এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দামও লাগামহীনভাবে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি প্রতি দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। চালের দামেও কিছুটা উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তবে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে।

ভোজ্যতেলের সংকটের বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে। চট্টগ্রামের বড় বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। চাহিদার অর্ধেকও তারা সরবরাহ করছেন না, যার ফলে খুচরা বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে বাজারে অস্থিরতা বেড়েছে এবং দাম আরও বাড়ছে। 

বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, "ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর পরেও ডিলারদের কাছ থেকে নতুন সরবরাহ পাচ্ছি না। দাম বাড়ানোর পর থেকে কোনো ডিলার অর্ডার নিচ্ছে না। আগের তেলগুলো বিক্রি করছি, সরবরাহ ঠিকভাবে না থাকায় তেলের অভাব দেখা দিয়েছে।"

এদিকে, আমদানিকারকরা দাবি করছেন যে, সরকার দুটি দফায় শুল্ক-কর কমিয়েও সুফল পাচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে আগের মতো ভোজ্যতেল আমদানি হচ্ছে না, এবং বিশ্ববাজারে দামও বেড়ে গেছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল হচ্ছে না। ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন সংকট এবং বায়োডিজেলে পাম অয়েলের ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানোর কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন আরমান জানান, "দাম বাড়ানোর পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তেল পরিশোধন এবং ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে, তবে সরবরাহে এখন আর বাধা নেই। আশা করছি অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।"

এদিকে, মুরগির সরবরাহ কম থাকায় বাজারে মুরগির দামও বাড়ছে। গত সপ্তাহে পাইকারিতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৮০-১৮৫ টাকা, যা শুক্রবার ২০০-২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে, প্রতি কেজিতে ৩০-৫০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দামেও কিছুটা উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কাটারি চালের কেজি শুক্রবার ৭৬ টাকা, জিরাশাইল ৭৩ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ টাকা, মিনিকেট আতপ ৬৮ টাকা এবং মিনিকেট সেদ্ধ ৬১ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে গুটি স্বর্ণা চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সবজি বাজারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ফলে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, টমেটো ৭০-১০০ টাকা, বেগুন ৪০-৬০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দামও কিছুটা কমে ৬০-৮০ টাকা কেজি হয়েছে।

মাছের বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। পোয়া মাছ ২৮০ টাকা, লইট্টা ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৫০-৬৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৭০-১৮০ টাকা, রুই ৩৫০-৩৮০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা, বেলে ২৮০-৪০০ টাকা এবং মৃগেল ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেলের সংকট এবং দাম বৃদ্ধির কারণে চট্টগ্রামের বাজারে সাধারণ মানুষের জন্য দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বেশ অসুবিধা তৈরি হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow