আ.লীগ সরকারের ৯১২ প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার
অর্থনীতি সম্পর্কিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্বেতপত্রে জানানো হয়েছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা অপচয় বা ক্ষতি হয়েছে। গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা,
অর্থনীতি সম্পর্কিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্বেতপত্রে জানানো হয়েছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা অপচয় বা ক্ষতি হয়েছে। গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা, যার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা লুটপাট হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নেওয়া ৯১২টি নতুন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও এসব প্রকল্পের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক কারণে নেয়া অপ্রয়োজনীয় এবং ভুল প্রকল্পগুলো বাতিল করা যেতে পারে। তবে, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।
বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, এসব অনুমোদনহীন প্রকল্পের বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি, তবে সংশোধিত এডিপির সময় সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের এডিপির বাস্তবায়ন জুলাই থেকে শুরু হয়েছে, এবং এতে নতুনভাবে ৯১২টি প্রকল্প তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সাধারণত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো অর্থবছর জুড়ে নতুন প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়ার জন্য তালিকা প্রেরণ করে, কিন্তু ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণে উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে মাত্র চারটি একনেক বৈঠক হয়েছে এবং তাতে খুব কম প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। নতুন প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে সবচেয়ে বেশি নতুন প্রকল্প যুক্ত হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাতে (১৮৬টি), কৃষি খাতে (১১৩টি) এবং পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে (৭৬টি)। অন্যান্য খাতে যেমন, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা (৬২টি), স্বাস্থ্য (৪৪টি), বিদ্যুৎ ও জ্বালানি (২২টি), সামাজিক সুরক্ষা (৫৪টি) ইত্যাদি বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ বলেন, এসব প্রকল্প মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিজ নিজ অগ্রাধিকার অনুযায়ী পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় এবং পরবর্তীতে নতুন প্রকল্পের তালিকা তৈরি হয়। তবে, সরকারকে প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে, প্রকৃত চাহিদা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে অনুমোদন দিতে হবে, নতুবা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রকল্পগুলো উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
সূত্র জানায়, নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রকল্প হচ্ছে- উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র শক্তিশালীকরণ, পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রূপান্তর, ঢাকায় লিভার প্রতিস্থাপন প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু স্বাস্থ্য নগরী স্থাপন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশে দুর্যোগ সহনীয় ভূমি ব্যবহার মহাপরিকল্পনা, সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং বিভিন্ন বিদ্যুৎ ও পানি উন্নয়ন প্রকল্প।
এছাড়া, পল্লী বিদ্যুতায়নে ৩১ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন এবং তিতাস ও কামতা ফিল্ডে কূপ খননের মতো প্রকল্পও রয়েছে।
What's Your Reaction?