আ.লীগের প্রভাবের কারণে লুটপাট ও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি ও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে।

Dec 30, 2024 - 04:38
 0  0
আ.লীগের প্রভাবের কারণে লুটপাট ও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি ও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে। এর পাশাপাশি সাবেক চেয়ারম্যান হত্যাসহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর নতুন একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইউপি সদস্যরা তাকে বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন। তার বিচারের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, ঝাড়ু মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। 

দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু সাঈদসহ একাধিক ইউপি সদস্যরা জানান, ২০২২ সালের ২৭ জুলাই আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আফজাল হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর তিনি পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যেমন, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের সড়কটি সংস্কারের জন্য তিন লাখ ও উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্প থেকে চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তিনি কাজ শুরু করেননি। একইভাবে, আলিসাকান্দা হবি দোকানদারের বাড়ি থেকে ইদ্রিসের বাড়ি পর্যন্ত সড়কটির জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। 

পাঁচকাহনিয়া এলাকার সেতুর সংযোগ সড়কটি ঠিকাদার বাস্তবায়ন করলেও সেখানে উন্নয়ন সহায়তা থেকে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের নামে আড়াই লাখ টাকা ও আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য এক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

স্থানীয়দের মতে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফজাল হোসেন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকা দখল করেছেন। তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন। তার বিরুদ্ধে ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। 

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকার গাড়িতে চড়েন, যা স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তার গাড়িতে আগুন দেয়।

২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর, দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ফারুককে শহরের আকুরটাকুর পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। ওই হত্যাকাণ্ডের মামলায় আফজাল হোসেনের নাম আসার পর তাকে আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমি আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান হয়নি এবং কোনো প্রকল্প লুটপাটও করিনি।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow