ভারতের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ নীতি ২০২৪ সালে কতটা কার্যকর হলো?
২০২৪ সালে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল এবং বেশ কিছু দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে যার ফলে ভারত এবং সেই দেশগুলোর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, চীনসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
২০২৪ সালে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল এবং বেশ কিছু দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে যার ফলে ভারত এবং সেই দেশগুলোর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, চীনসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদি যখন ২০১৪ সালে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন প্রায় সব প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধানরা ভারতে এসেছিলেন। তার শপথ গ্রহণের পর ভারতের বৈদেশিক নীতিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর গুরুত্ব স্পষ্ট হয়েছিল। 'নেইবারহুড ফার্স্ট' নীতি অনুসরণ করে ভারত প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চেয়েছিল।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন
মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দুইবার বাংলাদেশ সফর করেন, একবার ২০১৫ সালে এবং দ্বিতীয়বার ২০২১ সালে। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে। এর প্রভাব বাণিজ্যেও পড়েছে, ২০২৩ সালের আগস্টের তুলনায় ২০২৪ সালে ভারতের রফতানি ২৮% কমে গেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক
নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানে কেবল একবারই সফর করেছিলেন, কিন্তু এরপর সীমান্তের সংঘর্ষ এবং সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ২০২৪ সালে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক একই অবস্থানে রয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট দলও পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
নেপাল এবং মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক
নেপালে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ক্ষমতায় আসার পর ভারত-বিরোধী মনোভাব প্রকাশ পায়। নেপাল সীমান্তে কিছু বিরোধ থাকলেও ২০২৪ সালে এর প্রভাব তেমন পরিলক্ষিত হয়নি। অন্যদিকে মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ ক্ষমতায় আসার পর ভারত-বিরোধী মন্তব্য শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়, তবে পরবর্তীতে ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতি
শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এবং অর্থনৈতিক সংকটের পর ভারত শ্রীলঙ্কাকে সহায়তা করেছে। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর শ্রীলঙ্কা ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের পরও ভারত কাতারের মাধ্যমে আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পাকিস্তানকে মোকাবেলা করার সুযোগ পেতে পারে।
এই সব ঘটনার মাধ্যমে ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতির জন্য ২০২৪ একটি চ্যালেঞ্জিং বছর হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ২০২৫ সালে এসব সম্পর্কের পরিণতি আরও স্পষ্ট হতে পারে।
What's Your Reaction?