চীনে নতুন ভাইরাসের হানা, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বৃদ্ধি

করোনাভাইরাস গোটা পৃথিবীকে স্থবির করে দিয়েছিল, আর সেই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে চীনকেই দায়ী করা হয়। এখন, আবার চীনের কিছু প্রদেশে নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। শুক্রবার থেকে এই খবরের প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। 

Jan 5, 2025 - 08:57
 0  0
চীনে নতুন ভাইরাসের হানা, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বৃদ্ধি

করোনাভাইরাস গোটা পৃথিবীকে স্থবির করে দিয়েছিল, আর সেই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে চীনকেই দায়ী করা হয়। এখন, আবার চীনের কিছু প্রদেশে নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। শুক্রবার থেকে এই খবরের প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। 

ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড়, যেখানে অনেকেই মাস্ক পরে এবং চিন্তিত অবস্থায় বসে আছেন। রোগীরা বিছানায় শুয়ে আছেন। এসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, আক্রান্তরা সবাই 'হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস' (এইচএমপিভি) দ্বারা আক্রান্ত। তবে, এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

চীনের সরকার অবশ্য এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তারা জানাচ্ছে, এইচএমপিভি নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগের কিছু নেই এবং বিষয়টি শুধুমাত্র ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ হিসেবে চিহ্নিত করছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি পর্যটক এবং নাগরিকদের আশ্বস্ত করে বলেছে, চীনে ভ্রমণ সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে, তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তিনি বলেন, "শীতকালীন মৌসুমে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, চীনে আসা বিদেশিদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সরকারের যথেষ্ট যত্ন রয়েছে।"

চীনে হাসপাতালগুলোর ভিড়ের ছবি ও ভিডিও নিয়ে মুখ খুলেছেন এই মুখপাত্র। তার মতে, ভাইরাসটি মারাত্মক নয় এবং সংক্রমণের হারও গত বছরের তুলনায় কম। কোভিড-১৯ এর পর নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের খবর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে।

তবে এইচএমপিভির সংক্রমণ নতুন নয়। এই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় ২০০১ সালে, যখন নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞরা শিশুদের শ্বাসযন্ত্রে এটি পেয়েছিলেন। এরপর থেকে প্রায় ২৪ বছর কেটে গেলেও, এই ভাইরাসের কোন টিকা তৈরি হয়নি। 

সার্বিকভাবে, মেটানিউমোভাইরাস প্রায় ৬০ বছর ধরে পৃথিবীতে বিদ্যমান এবং এটি শীতকালে বেশি ছড়ায়। এর উপসর্গের মধ্যে থাকে জ্বর, সর্দি, এবং কাশি। খুব কম সংখ্যক রোগী নিউমোনিয়া বা অন্য গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন, তবে মৃত্যুহার সাধারণত খুব কম।

মেটানিউমোভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট 'অ্যান্টিভাইরাল' চিকিৎসা নেই। ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’ এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এই ভাইরাসের জন্য কোনো বিশেষ চিকিৎসা পাওয়া যায় না এবং চীনের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ তাদের ওয়েবসাইটে এই ভাইরাসের কোনো টিকা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেনি।

যদি কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে। চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থান অনুযায়ী অক্সিজেন বা কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করতে পারেন। 

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, সংক্রমিত ব্যক্তিরা যেন নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকেন, ভিড়পূর্ণ জায়গায় মাস্ক পরে থাকেন এবং হাত ধোয়ার মাধ্যমে জীবাণু প্রতিরোধে সচেতন থাকেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow