নতুন বছরে মোবাইল ও ওষুধসহ যেসব খরচ বাড়তে পারে
নতুন বছরে সংসারের খরচ আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর চাপে ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে- জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপিজি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ/সস, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পল (স্যান্ডেল), বিমান টিকিট ইত্যাদি।
নতুন বছরে সংসারের খরচ আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর চাপে ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে- জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপিজি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ/সস, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পল (স্যান্ডেল), বিমান টিকিট ইত্যাদি। এসব পণ্য ও সেবার দাম বৃদ্ধি পাবে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়াবে। এমনকি মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবারের খরচও বাড়বে।
এছাড়া, ঋণ পেতে আইএমএফ বাংলাদেশকে কর-জিডিপির অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এটি যোগ হবে। বাজেট প্রণয়নের সময় এনবিআরকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে বলা হয়, যা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে এনবিআর একাধিকবার জানিয়েছে। এর ওপর আইএমএফ আরও ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের চাপ দিয়েছে, ফলে ভ্যাট হার বাড়ানোর বিকল্প ছিল না।
সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাট হারের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে এবং এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে, কারণ সংসদ নেই। এটি আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে এনবিআর মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট হার বাড়াতে চায়নি, তবে ঋণ আদায়ের জন্য আইএমএফের চাপের কারণে ভ্যাট বৃদ্ধি করতে হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোনের শুল্ক একদফা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয় দফায় ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে, ফলে ১০০ টাকা রিচার্জে ৬৭ টাকা সেবা পাওয়া যাবে।
এছাড়া, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপিজি গ্যাস, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার, ব্র্যান্ডের পোশাক, বিমান টিকিটের দামও বাড়বে। ভ্যাট হার বাড়ানোর কারণে গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, সিগারেট, ফলমূল, টমেটো সস, মিষ্টি, চশমার ফ্রেম, সানগ্লাস, টয়লেট টিস্যু, গাড়ির ওয়ার্কশপ, তাজা-শুকনা সুপারি, ফলের রস, সাবান-ডিটারজেন্টসহ আরও অনেক পণ্যের দাম বাড়বে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত অন্যান্য দেশের তুলনায় কম, তবে আইএমএফের পরামর্শে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট হার পরিবর্তন না করার কথা ছিল, কারণ মূল্যস্ফীতির হার ইতোমধ্যে ১৩ শতাংশের উপরে রয়েছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে এবং ছোট ব্যবসায়ীরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাটের বোঝা ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিতে পারলেও ছোট ব্যবসাগুলোর পক্ষে তা সম্ভব নয়, ফলে কর্মসংস্থানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এছাড়া, আইএমএফের চাপের কারণে এনবিআর ছোট ব্যবসার ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করবে, কারণ টার্নওভার করের তালিকাভুক্তির সীমা কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য চাপ বাড়াবে।
What's Your Reaction?