গরিবের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষিত না থাকায় সরকার বারবার হোঁচট খাচ্ছে: শিমুল বিশ্বাস
বাংলাদেশের সরকার গরিব মানুষের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলে তারা প্রতিনিয়ত হোঁচট খাচ্ছে—এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাসমুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
বাংলাদেশের সরকার গরিব মানুষের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলে তারা প্রতিনিয়ত হোঁচট খাচ্ছে—এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাসমুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বসুন্ধরায় ঢাকা মহানগরী ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের ৩৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিমুল বিশ্বাস বলেন, "যে রাষ্ট্র বা সরকার গরিব মানুষের মজুরি ও মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করে দেয় এবং তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করে, সেই রাষ্ট্রই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমেরিকা, ইউরোপ, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর—এই দেশগুলোর উন্নতির পেছনে রয়েছে তাদের রাষ্ট্রের শ্রমিকদের তিনটি মৌলিক অধিকার: ন্যায্য মজুরি, নাগরিকদের সম্মান ও মর্যাদা, এবং মৌলিক অধিকার।"
তিনি আরও বলেন, "যে দেশগুলো এই তিনটি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছে, তারা উন্নতি লাভ করেছে এবং ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।"
অ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, "আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এবং সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের ৯৭ জন নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন, তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে এই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এই আন্দোলনে যেসব শ্রমিক জীবন দিয়েছেন, তাদের পরিবার এখনও রাষ্ট্র থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়নি। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের ৯০ শতাংশ পরিবার এখনও কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি।"
বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতা বলেন, "বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ৭০ শতাংশ অর্থ উপার্জন করে দেশের গার্মেন্টস শ্রমিক, চামড়া শিল্পের শ্রমিক এবং বিদেশে কর্মরত শ্রমিকরা। যারা দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখে, তাদের ন্যায্য অধিকার সুরক্ষা করা জরুরি।"
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে, বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী সরকার যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে, তার সাক্ষী আপনারা সবাই। ১৭ বছরের নির্যাতনের ইতিহাস কখনো ভুলে যাবেন না।"
তিনি বলেন, "আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারের শাসনামলে সংবাদমাধ্যমগুলোও দলীয়করণ করা হয়েছে। কিসে কী নিউজ প্রচার হবে, এবং কী হবে না—এটা সবই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার নিয়ন্ত্রণ করেছে। একইভাবে বিচার বিভাগও তাদের অধীনে চলে গেছে, যেখানে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্তদের জন্য সরকারের নির্দেশনা ছিল।"
আমিনুল হক আরও বলেন, "বিএনপি বিশ্বাস করে, সব ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ, এবং আগামীতে জনগণই এই দেশের পথ নির্ধারণ করবে।"
ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ও ঢাকা মহানগরী ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে, এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লায়ন ফরিদ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজউজ্জামান মামুন মোল্লা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, যুগ্ম-আহ্বায়ক তুহিনূর ইসলাম তুহীন, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তর-এর আহ্বায়ক কাজী শাহআলম রাজা, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মনজু, ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন ভাটারা থানা শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক ফারুক মোল্লা, সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম রব্বানী প্রমুখ।
What's Your Reaction?