সিলেটে কি অনুষ্ঠিত হবে রান উৎসব?
ঢাকায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে সাধারণত সমালোচনা থাকে উইকেটের রানখরার বিষয়ে। কিন্তু এবার তা উল্টো হয়ে গেছে। মিরপুরের মন্থর উইকেটে এবার রীতিমতো রান উৎসব শুরু হয়েছে।
ঢাকায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে সাধারণত সমালোচনা থাকে উইকেটের রানখরার বিষয়ে। কিন্তু এবার তা উল্টো হয়ে গেছে। মিরপুরের মন্থর উইকেটে এবার রীতিমতো রান উৎসব শুরু হয়েছে।
গত আসরে মিরপুরে রান হয়েছিল, তবে চলতি আসরে তা আরও বেড়েছে। টিকিটের জন্য ছিল হাহাকার, এমনকি টিকিট বুথে আগুন ধরানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয়রা ভালো করেছে, বিশেষত পেস বোলাররা যারা বোলিংয়ে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকায় প্রথম পর্বের শেষদিনে দুই বিদেশি খেলোয়াড়, চিটাগং কিংসের উসমান খান ও ঢাকা ক্যাপিটালসের থিসারা পেরেরা সেঞ্চুরি করেছেন। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের নির্দেশে কিউরেটররা উইকেটের পরিবর্তন করেছেন। আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ১২ ম্যাচের সিলেট পর্ব, যা নতুন উন্মাদনায় উত্তেজনা সৃষ্টি করবে।
প্রথম ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ১৯৭ রান তাড়ায় তামিম ইকবালের বরিশাল দল দারুণ জয় পেয়েছে। মাঠে ছিল গ্যালারি ভরা দর্শক। মিরপুরে খেলা হওয়া চারদিনে এমন দৃশ্য ছিল নিয়মিত। আগে টুর্নামেন্টের শুরুতে আলোচনা বেশি হতো রান খরা এবং দর্শকের অভাব নিয়ে। তবে এবার মিরপুরে নতুন কিছু দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে। আট ম্যাচে মাত্র একবার প্রথম ইনিংসে দেড়শ রানও ছুঁতে পারেনি কোনো দল। তবে সব মিলিয়ে ১৬ ইনিংসে ১৬০ ছাড়ানো স্কোর ৯টি।
এই আট ম্যাচে মোট ২৬৪৮ রান হয়েছে, যার গড় প্রতি ম্যাচে ৩৩১ রান। ইনিংসপ্রতি ১৬৫.৫ রান এসেছে। আগের দুই আসরের তুলনায় এবারের বিপিএল রানখরার ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। ২০২৪ আসরে ঢাকায় প্রথম আট ম্যাচে ২৩৭৮ রান হয়েছিল, যেখানে ম্যাচপ্রতি গড় ছিল ২৯৭.২৫!
দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ সর্বোচ্চ ১২ উইকেট নেন মাত্র তিন ম্যাচে। এক ম্যাচে ১৯ রান দিয়ে নেন বিপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাত উইকেট। রংপুর রাইডার্সের খুশদিল শাহ সাত উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন। রংপুরের নাহিদ রানা ও খুলনা টাইগার্সের আবু হায়দার রনি যৌথভাবে ছয়টি করে উইকেট নেন, আর চিটাগংয়ের আলিস আল ইসলাম নেন দুই ম্যাচে পাঁচ উইকেট।
বিপিএলে সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করা তিনজনই বাংলাদেশের স্পিনার। খুলনার মেহেদী হাসান মিরাজ প্রতি ওভারে সর্বনিম্ন চার রান দিয়েছেন, চিটাগংয়ের আলিস দিয়েছেন ৪.২৫ রান, আর আলিসের সতীর্থ আরাফাত সানি দিয়েছেন ৫.৭৫ রান প্রতি ওভার।
রাজধানীতে ব্যাটে-বলে দেশিদের রাজত্ব দেখা গেছে। সর্বোচ্চ ২২৯ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফ। বাংলাদেশের মাহিদুল ইসলাম ২০৬.৮১, শামীম হোসেন ১৯৫.১২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯৪ ও নুরুল হাসান সোহান ১৮৮ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে তিনজনই বাংলাদেশি। সিলেট পর্বে বিজয় ও মাহিদুলরা এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন কি না, সেটি এখন দেখার বিষয়। যদি দেশিরা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন, তাহলে বিপিএলের শেষে বাংলাদেশের জন্য তা বড় লাভের বিষয় হবে।
What's Your Reaction?