ইসরাইলি জিম্মির নতুন ভিডিও প্রকাশ করল হামাস, চাপের মুখে নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হাতে আটক থাকা ১৯ বছর বয়সি ইসরাইলি তরুণী লিরি আলবাগের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা। শনিবার প্রকাশিত এই ভিডিওটি সম্পর্কে সঠিক সময় উল্লেখ করা হয়নি, তবে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এই ভিডিও ইসরাইলি জিম্মিদের বিষয়ে হামাসের তরফে প্রকাশিত সর্বশেষ ভিডিও, যা গাজার ভেতরে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় অপহৃত ২৫১ জনের মধ্যে একটি। ভিডিওতে লিরি আলবাগ জানিয়েছেন, তাকে ৪৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বন্দি রাখা হয়েছে। ভিডিওটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে তিন মিনিট, তবে এটি কোন সময় ধারণ করা হয়েছে, তা নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি।

কাতারের দোহায় শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু হলেও, এই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে ইসরাইলি প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে হামাস। 

লিরির বাবা-মা, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, "মনে করুন, আপনার সন্তানরাও সেখানে আছেন।" এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, হামাসের পাঠানো ভিডিও দেখে তারা শ্বাস নিতে পারছেন না। তারা নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "লিরি বেঁচে আছে এবং তাকে আমাদের মাঝে জীবিত ফিরিয়ে আনতে হবে। এটি শুধুমাত্র আপনার (নেতানিয়াহুর) উপর নির্ভর করে।"

হামাসের হাতে আটক হওয়ার আগে লিরি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নজরদারি সৈনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৭ অক্টোবর হামাস যখন সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে আক্রমণ চালায়, তখন লিরি নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করছিলেন। হামাসের আক্রমণে ১৫ নজরদারি সৈন্য নিহত হন এবং লিরি সহ আরও ছয়জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে আক্রমণ চালিয়ে ১,২০৭ জনকে হত্যা করে। ২৫১ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস, বর্তমানে গাজায় ৯৭ জন জিম্মি রয়েছে, যার মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, তবে তাদের লাশ গাজায় রয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরাইলের হামলায় সাড়ে ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ১ লাখের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে, এবং গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য একটি প্রতিনিধি দলকে অনুমোদন দিয়েছেন। তবে, তিনি প্রকাশ্যে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির কথাটি অস্বীকার করে যাচ্ছেন।